নিজেকে খুশি রাখার কারণ অন্য কারো মাঝে খোঁজার চেষ্টা করো না : জাকির হোসেন মিলন
- আপডেট সময় : ০৪:৩৪:৫৬ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২৬২ বার পড়া হয়েছে
শিক্ষকতা পেশায় জড়িত থাকার কারণে আমার শিক্ষার্থীদের অনেক সময় অনেককেই মোটিভেশন দেওয়ার চেষ্টা করেছি।। তবে বেশিরভাগ চেষ্টা করেছি ভালো ছাত্র হওয়ার কিংবা ভালো রেজাল্ট কিভাবে করা যায়। কারণ তার সাথে আমার স্বার্থ জড়িত,, যদি আমার শিক্ষার্থীরা ভালো রেজাল্ট করে তাহলে শিক্ষক হিসেবে আমার সুনাম বৃত্তি পাবে, পরের বছরে আমার প্রতিষ্ঠানের বেশি বেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হবে। কিন্তু আজ নিজেকে ভালো রাখার কিছু টিপস নিয়ে লিখবো ভাবছি।।
জীবনে যা কিছুই করো না কেনো, নিজেকে খুশি রাখার কারন অন্য কারো মাঝে খোঁজার চেষ্টা করো না। কখনো কারো উপর এত এক্ট্রিম লেভেলের নির্ভরশীল হবে না যাতে তোমার এক্সপেকটেশন পূরণ না হলে মন ছোট হয়। বিশেষ করে মানসিকভাবে।
তোমার মন খারাপ তুমি হেমন্তের গান শুনো, নিজেকে এক কাপ গরম কফি বানিয়ে দাও, বিকেল বেলা মিষ্টি রোদে আপনমনে নিজের সাথে কথা বলো, পছন্দের লেখকের বই পড়ো। নিজের কোন বিশেষ ক্রিয়েটিভিটি থাকলে সেটা নিয়ে নিজেকে ব্যস্ত রাখো। 🥀
অন্যকে ব্যঙ্গ করে স্ট্যাটাস লেখা, নিজের দুঃখ, দুর্বলতা জনসম্মুখে প্রকাশ করা কোন বুদ্ধিমান মানুষের কাজ নয়। খুব বেশি মন খারাপ হলে রুম অন্ধকার করে চুপচাপ বসে থাকো। যার যার ধর্ম অনুসারে প্রার্থনা করো।
পুরানো কোন স্মৃতি মনে করো, হাসো, কাঁদো যাই করো নিজের সাথে নিজের এমন একটা সুন্দরম্পর্ক তৈরি করো যাতে নিজের মন খারাপের দিনগুলোতে একটা কাঁধের প্রয়োজন না হয়।
যদি কোন কাজে সফল হও নিজেকে ট্রিট দাও, যদি অকৃতকার্য হও নিজের সাথে অভিমান করো, নিজের সাথে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হও। তবে অন্য কারো চোখে নিজের পারফেকশন খোঁজার চেষ্টা করো না।
অন্যের চোখ তোমার ত্রুটিগুলোর মাঝে যখন তোমার গুণগুলো খুঁজে পাবে না তুমি কষ্ট পাবে, পারলে তুমিই পারবে। রেস্টুরেন্টে একা বসে খাওয়াটাকে নরমালাইজ করতে হবে, পার্কে নিজের সাথে সময় কাটাতে চাওয়াকে হাস্যকর কেন মনে হবে? যদি সম্ভব হয় ফাইনানসিয়ালিও নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। যাতে তীব্র মুড সুয়িংয়ে নিজেকে একটা চকলেট উপহার দিতে পার, নিজের জন্মদিনে নিজেকে গিফট দিতে পারো অথবা পাড়ার সুবিধা বঞ্চিত শিশুদের নিয়ে জন্মদিনের আনন্দ ভাগাভাগি করো, নিজের পছন্দের ড্রেসটা টাকা জমিয়ে হলেও নিজের জন্য কিনতে দিতে পারো।
মাঝে মাঝে নিজেকে কিছু ফুল দিবে। ঘরের এক কোণায় ফুল থাকবে, সুন্দর একটা গন্ধ ছড়াবে মন আপনা আপনি ভাল হয়ে যাবে। সবাইকে খুশি রাখাও তোমার দায়িত্ব না, দুনিয়ার কারো পক্ষেই সবাইকে খুশি করা সম্ভব না। যেখানে পারবে না, “না” বলাও শিখতে হবে।
আমার বাবা-মা আমাকে এপ্রিসিয়েট করে না, আমার বন্ধু আমাকে সময় দেয় না, আমার কাছের প্রিয়জন আমার সাথে ঠিকমত কথা বলে না, আমার জন্য সময় নেই এসব উপদ্রবের সৃষ্টি করবে না। আমাদের ভাষায় যেটা এটেনশন অন্যের জন্য এই চাওয়াগুলো অযথা টেনশন মাত্র।
কেন নিজেকে অন্যের বিরক্তির কারণ বানাবেন?
একটা সুন্দর ব্যক্তিত্ব থাকার জন্য খুব কঠিন হওয়ার দরকার নেই শুধু নিজেকে অতটুকু ভালবাসলেই হবে যাতে অন্যের চোখে নিজের জন্য ভালবাসা খোঁজার প্রয়োজন না হয়।
বর্তমান এই চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে মানুষের মন প্লাস্টিকের মতোই, কখন জানি রূপ বদলায় কারণে বদলায়, অকারণে বদলায়। তাই মনে হয় নিজের মধ্যে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখা তুলনামূলক ভাল।
জাকির হোসেন মিলন
অধ্যক্ষ
ওয়ার্ল্ডপ্লাস রেজিডেনশল স্কুল এন্ড কলেজ, ঠাকুরগাঁও
ও সাবেক শিক্ষার্থী
নৃবিজ্ঞান বিভাগ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়